কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ডিজিটি নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই স্কুলের সাবেক এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় রোববার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ডিজিটি নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তার স্কুলের সাবেক এক ছাত্রীকে (২০) নিজ বাড়িতে একা পেয়ে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। সে সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন সেখানে ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। একই সাথে প্রধান শিক্ষক জামালকে আটকে রাখেন।
পরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি মিমাংসা করার উদ্যোগ নেন। ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মিটমাট করে দেয়ার প্রয়াস চালানোয় জনরোষের কবল থেকে রক্ষা পান প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন। ফিরে যান নিজ বাড়িতে। এদিকে তার সাবেক ছাত্রী ওই ভুক্তভোগী নারী মিমাংসার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং নিজের এই সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
পরে এ ব্যাপারে ওই ছাত্রী দৌলতপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে তার অভিযোগের সতত্যা মেলে। রোববার সকালে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদকালে অভিযোগের আংশিক সতত্য স্বীকার করায় এবং পুলিশি তদন্তে সত্যতা মেলায় অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর হয়। ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হিসাবে গ্রহণ করে পুলিশ। পুলিশের হেফাজতে থাকা প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে রোববার সন্ধ্যায় এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সোমবার সকালে তাকে আদালতে তোলা হবে।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন তাকে দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন। তার উত্যক্তের কারণে ডিজিটি গার্লস স্কুল ত্যাগ করে অন্য একটি স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য হন। একপর্যায়ে তার বিয়ে হয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষক জামালের কুনজর থেকে রক্ষা পাননি। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে একা পেয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি মামলার বাদীকে নাতনি দাবি করেন এবং সেই হিসাবে দুষ্টুমি করে তার হাত চেপে ধরেছিলেন বলে ঘটনার আংশিক সতত্যা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেও বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.