যশোরের বেনাপোলে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা বয়স্ক ভাতা নিয়ে বাণিজ্যে করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বেনাপোলের অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে সরকার প্রদত্ত বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়। গত সোমবার (৫ আগস্ট) ভাতা প্রাপ্তরা তাদের প্রাপ্য ৩ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন কিন্তু এর আগে বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের যোগসাজসে পরিষদের সদস্যরা ভাতাপ্রাপ্তদের কাছ থেকে উৎকোচ হিসাবে নগদে এক হাজার ২ শত টাকা নিয়েছেন।
সূত্র জানায়, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ০২ নং ঘিবা ওয়ার্ডের সদস্য ইউনুস, ০৪ নং ধান্যখোলা ওয়ার্ডের সদস্য হাসান, ০৭ নং বোয়ালিয়া ওয়ার্ডের সদস্য ছাকের ও ০৮ নং শাখারীপোতা ওয়ার্ডের সদস্য মিন্টুর মোট ৭৭ জন কার্ডধারীর বয়স্ক ভাতার ৩ হাজার টাকার চেক দেওয়ার আগে প্রত্যেকের কাছ থেকে নগদ ১ হাজার ২ শত টাকা অগ্রিম নিয়েছেন।
এ প্রতিবেদক এ তথ্যের অনুসন্ধান করলে তার শত ভাগ সত্যতা পাওয়া যায়। কয়েকজন বয়স্ক ভুক্তভোগী দেশ দর্পনের এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের কাছে বয়স্ক ভাতার অগ্রণী ব্যাংকের চেক দেওয়ার আগে মিজান চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আমাদের কাছ থেকে বার’শ টাকা নিয়ে তারপর চেক প্রদান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমি আমার বয়স্ক ভাতার কার্ড থেকে গত এক বছরে কোন টাকা তুলি নাই সে ক্ষেত্রে আমাকে তারা ছয় হাজার টাকার কথা বললেও ব্যাংকের চেকে তিন হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য একজন বলেন, আমার স্বামী স্টোকের রোগী সে বেশ অসুস্থ তার নামে তিন হাজার টাকার চেক দিলেও অগ্রিম বারো’শ টাকা নিয়েছেন। ভেবেছিলাম বয়স্ক ভাতার পুরো টাকাটা দিয়ে আমার অসুস্থ স্বামীকে যতোটুকু পারি চিকিৎসা করাবো কিন্তু এখন বুঝতে পারছি না তাদের দিয়ে অবশিষ্ট এই আঠার’শ টাকা কতটুকু চিকিৎসা করাতে পারবো।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বয়স্ক ভাতার কর্তনের টাকা কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগ যায় ০৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিলনের পকেটে এবং বাকিটা যাই চেয়ারম্যান মিজান ও তার চার ঘনিষ্ঠ চার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পকেটে।
অভিযুক্ত সচিব মিলনেরকাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এদিকে, মিজান চেয়ারম্যান কাছে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগে দুই থেকে তিন হাজার টাকা নিত এখন তো আগের চেয়ে অনেক কম নেওয়া হচ্ছে।
বয়স্ক ভাতার এ টাকা কেন নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন না এটা নেওয়ার কোন বৈধ্যতা নেই। তবে সামনে ঈদ তাই সবার কাছ থেকে বারো‘শ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অফিসার ওহাব আলী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি বছরে প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ড আসে ৬০ থেকে ৬৫ টি। তিনি আরো বলেন, বয়স্ক ভাতার কার্ড নিতে কোন টাকা লাগে না।
সরকার যখন জনগণের জন্য এ ভাতার ব্যবস্থা করেছেন তাহলে কেন টাকা দিতে হবে পরিষদের চেয়ারম্যানদের। ভুক্তভোগীরা এব্যাপারে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আগস্ট ৬, ২০১৯ at ১৩:৫৪:২৭ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/আরআই/এসজে
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.