যশোরের ঝিকরগাছার মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের তিন সদস্যকে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাদেরকে লাঞ্চিত পর্যন্ত করা হচ্ছে এবং না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওই তিন ওয়ার্ডের অন্তত ১১ হাজার জনগণ।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় তাদের ওপর এ নির্যাতন করা হচ্ছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন ১নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মফিজুর রহমান, ৪নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আমির হোসেন ও ৯নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কামরুল হাসান।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার ওয়ার্ডটি ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় ওয়ার্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার ভিজিএফ চাল এ ওয়ার্ডে বরাদ্দ ৮৪০টি। কিন্তু আমাকে বাদ রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস সমর্থিত ব্যক্তির মাধ্যমে ৪০০ কার্ড বিতরণ করে বাকিগুলো কালোবাজারে বিক্রি করবেন চেয়ারম্যান। রোজার ঈদে তাই হয়েছে, এবারও তাই হচ্ছে। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট করার অপরাধে আমি কায়েমখোলা কাঁচাবাজারের ইজারাদার হয়েও টাকা তুলতে পারছি না। সপ্তাহের দুই হাটে চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে টাকা উঠিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ডের বিভিন্ন প্রকল্পে আমার সই জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উঠিয়ে নেন তিনি। সোলার প্রকল্পেও তিনি করেছেন মহাদুর্নীতি। নিজের বাড়িতেও ৭৫ ওয়াটের সরকারি সোলার লাগিয়েছেন।
দেশদর্পণে আরও পড়ুন: নিশ্চিন্তপুরে প্রতিপক্ষের ক্ষমতার দাপটে অবরুদ্ধ পাঁচটি পরিবার
অভিযোগকারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অপর সদস্য আমির হোসেন বলেন, এ পর্যন্ত আমার ওপর দুবার হামলা হয়েছে। বাড়িতে গিয়ে আমার স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে। এ ওয়ার্ডে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছে জামাত-বিএনপি সমর্থিত মতিয়ার রহমানের ছেলে কামারুল এবং ১২টি নাশকতা মামলার আসামি বুলবুলি। আমাকে সকল কাজ থেকে বিরত রেখে ওয়ার্ডের কর্মসৃজন প্রকল্পের ২৪টি কার্ডে সই জালিয়াতি করে টাকা উঠিয়ে লুটপাট করেছেন চেয়ারম্যান।
৯নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, চেয়ারম্যান নৌকার বিপক্ষে আনরস প্রতীকে ভোট করতে বলেছিলেন। আমি রাজি হইনি। পরে উপজেলায় আনারস প্রতীক পাস করায় তিনি ইউনিয়নের কোনো কাজে আমাকে নোটিশ করেন না। আমার সঙ্গে নির্বাচন করে মাত্র ৩২ ভোট পাওয়া ব্যক্তি এখন মেম্বারের দায়িত্ব পালন করছে।
কামরুল বলেন, শুধু আমি একা বঞ্চিত নই; এ ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে যারাই কাজ করেছে সবাই নির্যাতিত এবং বঞ্চিত। এককথায় এ ইউনিয়নে এখন জামাত-বিএনপির রাজত্ব কায়েম চলছে।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ বলেন, মাগুরা ইউনিয়নের ওই তিন ইউপি সদস্য আমাকে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি আমার রাজনৈতিক নেতা ও সরকারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তদন্ত করে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের বিষয়টি সমাধান এবং দোষীদের সাজা দেয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

জানতে চাইলে ২নম্বর মাগুরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, আমার ইউনিয়নে কোনো সমস্যা নেই। সবকিছু ঠিক আছে।
আগস্ট ৭, ২০১৯ at ১৬:৫৬:৩৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/একে/এসজে
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.