পুলিশ পরিচয়ে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইদুজ্জামান বাবু @ দাঁতাল বাবুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্ধতর্ন কর্মকর্তাগন তাকে আটকের খবর নিশ্চিত করেছেন না। ফলে, বাবুকে পুলিশ আটক করেছে নাকি তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন এ নিয়ে সৃৃষ্টি হয়েছে ধরমজাল।
সাইদুজ্জামান বাবু @ দাতাল বাবু আরবপুর এলাকার মৃত হাসেম আলীর ছেলে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাদা পোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে যায় অভিযোগ করে তার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এরপর থেকে বাবুর কোনো খোঁজ তারা পাচ্ছেন না। পুলিশ তাকে আটকের কথা স্বীকার করছে না কিংবা সন্ধানের ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ তাদের।
এদিকে সাইদুজ্জামান বাবুকে পুলিশ আটক করেছে নাকি তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন তা জানতে স্থানীয় আরবপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যাওয়ার সময় লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। বাবু সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক। তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় বাবু আটকের প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে।
বাবুর স্ত্রী আজমিরা খাতুন জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাবু বাড়িতেই ছিলেন। এসময় সাদা পোশাকধারী কয়েকজন পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে খালিগায়ে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় বাবুকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা বাবু ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন এবং সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিনও নিয়ে যায়। তাদের নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তারা শুধু বলেন, থানা থেকে এসেছি এবং বাবুকে আমরা জিঙ্গাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাচ্ছি। তাদের প্রত্যেকের কোমড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও আইডি কার্ড ঝোলানো ছিল।
তিনি জানান, কিন্তু পরে থানা ও ডিবি অফিসসহ পুলিশের অন্যান্য স্টেশনে খোঁজ নিতে গেলে তারা বাবুকে আটকের কথা অস্বীকার করেন।
আরবপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, বাবুকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে নিখোঁজ রাখার খবরটি জানতে পেরে তারা সকাল ১১টার পর দোকানপাট বন্ধ করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই পেছন থেকে সাদা পোশাকধারীরা লাঠিচার্জ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেওয়া সাদাপোশাকধারী এক ব্যক্তি তারসহ কয়েকজনের নাম-ঠিকানা লিখে নেন।
এদিকে সারাদিনেও বাবুর সন্ধান না মেলায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তার স্বজনরা। তাকে আটক করে অজ্ঞাতস্থানে রাখার অভিযোগে সন্ধ্যায় শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শেষে থানামোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ হয়রানিমূলকভাবে বাবুকে আটক করে রেখেছে। আইনের দৃষ্টিতে বাবু অপরাধী হলে তাকে আইনি প্রক্রিয়াতেই আটক দেখিয়ে জিঙ্গাসাবাদের দাবি করেন তারা।
এ ব্যাপারে যশোর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সাইদুজ্জামান বাবু নামে আমার কাছে কেউ নেই।’ পুলিশ তাকে আটক করেছে কি-না জানতে চাইলেও একই উত্তর দেন তিনি।
তাকে আটকের কথা অস্বীকার করেন ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মারুফ আহমেদও। তিনি বলেন, ডিবির সকল অভিযানে সবাই জ্যাকেট পড়ে থাকেন। ফলে তারা গেলে মানুষ চিনতে পারে।
তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হকের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, বাবুর নামে ৩টি হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি ও মারামারিসহ ১৪টি মামলা রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা সংস্থা সূত্র জানিয়েছেন।
আগস্ট ৮, ২০১৯ at ০৬:৩৫:৪৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/তআ
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.