বেকায়দায় রোগী ও স্বজনরা
জ্বরের রোগী নিয়ে যশোরে রীতিমত চলছে বাণিজ্য। জ্বরের আক্রান্ত রোগীরা ডেঙ্গু আতঙ্কে ছুটছেন সরকারী বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। কেউ ডাক্তারের পরামর্শে আর কেউ কেউ নিজ থেকে এনএসওয়ান, আইজিজি (ওমএ) ও আইজিএম (ওমগ) ডেঙ্গু টেস্ট করাচ্ছেন। আর সরকার কর্তৃক টেস্ট মুল্য নির্ধারণ করে দেয়ায় ক্ষুব্ধ কতিপয় বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহকারীকে দিয়ে রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জমা নেয়া মানিরিসিটে সন্নিবেশন করছেন। এ ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করলেও রোগীর অবস্থা বুঝে টেস্ট করা হচ্ছে। তবে, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সঠিক না বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, শরীরে জ্বর এলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছুটছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে। আর প্রাথমিক সিনটম না থাকলেও রোগীর আতংকের কারণে চিকিৎসক রোগীকে টেস্ট করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অসৎ পথ অবলম্বন করছে। তারা, নমুনা সংগ্রহকারীকে রোগীর সকল ডাটা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
কারণ হিসাবে জানা গেছে, গত রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ডেঙ্গুর মূল পরীক্ষা এনএসওয়ান (ঘঝ১)-এর জন্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়া যাবে। অন্যদিকে, আইজিজি (ওমএ) ও আইজিএম (ওমগ)- এই দুটি পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। এ ছাড়া সিবিসি (ঈইঈ) পরীক্ষার মূল্য হবে ৪০০ টাকা।
সরকার কর্তৃক টেস্ট পাঁচশত টাকা নির্ধারণ করায় ক্ষুব্ধ কতিপয় বেসরকারি হাসপাতালের মালিকগণ। যশোরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল মালিকের সাথে কথা বলে এমনটা স্পষ্টত মনে হয়েছে। তাদের দাবি, ডেঙ্গু টেস্টের কীটসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় খরচ হয় ৭ থেকে ৮ শত টাকা।
একটি সূত্র জানিয়েছে, খরচের চেয়ে টেস্টের মুল্য কম হওয়ায় কতিপয় অসাধু ক্লিনিক ও হাসপাতালের মালিকগণ ভিন্ন কৌশল হিসাবে নমুনা সংগ্রহকারীকে ব্যবহার করছেন। তবে, মালিক পক্ষ এ বিষয়টি স্বীকার করেননি। তবে, কীট বাঁচাতে বা বাইরে বিক্রি করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্যাথলজিস্টরা এ ধরণের কাজ করছে কি না সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে, কীট বাইরে নেয়ার সুযোগ নেই বলেও তারা দাবি করেছেন।
ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য সব ধরনের পরীক্ষার সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর এই কম মুল্য নির্ধারণেই যত অসৎ পন্থা অবলম্বন করছেন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোগীর নমুনা সংগ্রহের সময় রোগীর সম্পর্কে তথ্য নেয়ার কোন বিধান আছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ লিটু বলেন, নমুনা যা আসবে তা থেকেই টেস্ট হবে। কোন অসৎ উদ্দেশ্য না থাকলে এটা কেউই করবে না। এটা পুরোপুরি স্বাস্থ্যনীতির পরিপন্থী।
আগস্ট ৮, ২০১৯ at ১৭:৫১:২৬ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/তআ
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.