সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় ভারত। জম্মু-কাশ্মীরে অন্যতম কঠোর সামরিক নিরাপত্তা জারির পাশাপাশি কড়া কারফিউর মধ্যে বন্ধ রাখা হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট।
এর ফলশ্রুতিতে কাশ্মীরে কী ঘটছে, এ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন বাইরে থাকা কাশ্মীরবাসি। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে।
এমনি পরিস্থিতিতে সন্তানকে এক মিনিটের জন্য ফোন করার সুযোগ পেয়ে কাশ্মীরি এক নারী তার ছেলেকে ঈদে বাড়িতে না আসতে বলেছেন।
ওই কাশ্মীরি মা বলেন, আমার স্বামী বেঙ্গালুরুতে থাকা আমার ছেলেকে ফোন করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে আমি বলেছি, আমি যাবো। কারণ তল্লাশি চৌকিতে নিরাপত্তাকর্মীরা পুরুষের চেয়ে নারীদের কম বাধা দিচ্ছে। এরপর জওয়াহর নগর থেকে হেঁটে আমার ছেলেকে ফোন দিতে ডিসি অফিসে গেলাম।
তিনি আরও বলেন, “বেঙ্গালুরুতে থাকা আমার ছেলেকে ফোন দিতেই প্রথমে কেঁদে দেয় সে। আমাদের নিয়ে চিন্তা না করার জন্য বলি তাকে এবং নিজের খেয়াল রাখতে বলি। আমি তাকে বলি, ঈদে বাড়ি এসো না বাবা। এখানের রিস্থিতি খুবই খারাপ।”
দেশদর্পণে আরও পড়ুন: কাশ্মীরকে ঢেলে সাজাবে কেন্দ্র ঘোষণা নরেন্দ্র মোদির
সাধারণ মানুষের জন্য দূরে জরুরি ফোন করতে দুটি টেলিফোন লাইন উন্মুক্ত করার পর ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নারীরা বাইরে থাকা তাদের সন্তানদের সঙ্গে একটু কথা বলতে শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনারের(ডিসি) অফিসে জড়ো হচ্ছেন।
দ্য প্রিন্ট জানায়, বৃহস্পতিবার রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনারের অফিসের বাইরে জড়ো হয়ে রাজ্যের বাইরে থাকা তাদের সন্তান ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়ার দাবি জানান কাশ্মীরিরা। এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে এক মিনিটের জন্য দুইটি টেলিফোন ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয় তাদের।
ডিসি শহীদ চৌধুরী বলেন, পরিবারের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাচ্ছেন বলে আমরা বুঝতে পেরেছি। যে কারণে আমরা ফোন সেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যে কেউ এখানে এসে স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারবেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থানীয়রা এখানে এসে ফোনে স্বজনদের সঙ্গে ইচ্ছামতো কথা বলতে পারছেন। তবে অবশ্যই পরিমিত সময়ের মধ্যেই তাদের কথা বলতে হবে। অপারেটররা প্রত্যেকের জন্য এক মিনিটের কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
দেশদর্পণে আরও পড়ুন: যে ছবি নিয়ে তোলপাড় গোটা বিশ্ব
শ্রীনগরের হাওয়ালের বাসিন্দা ফাহমিদা বলেন, আমার মেয়ের চলতি সপ্তাহে আসার কথা ছিল। কিন্তু সে টিকিট কাটতে পারেনি। কারণ এর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই সারাদিন আমি দরজার বাইরে তাকিয়ে থাকি, কখন সে আসবে।
তিনি বলেন, চান্দিগড়ে সে কেমন আছে, তা নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কারফিউর মধ্যে সে শ্রীনগরে পৌঁছাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে আমাদের হতাশার শেষ নেই।
আগস্ট ৯, ২০১৯ at ১৮:০৮:৫৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসজে
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.