Take a fresh look at your lifestyle.

মুরগী আর পান ব্যবসায়ীরাও সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

মুরগী আর পান ব্যবসায়ীরাও নাম সর্বস্ব সংবাদপত্রের নামে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী হয়ে উঠেছে। আর তাদের দৌরাত্ম্য পেশাগত সাংবাদিকদের সুনাম নষ্ট করছে। এদের মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই ভূয়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কারনে যথাযথ সম্মান নষ্ট হচ্ছে এ পেশায় নিয়োজিতদের।

আর এদের কারণে মানবাধিকার শব্দটি আজ আতংকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন গুলোর কারনে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ মানবাধিকারের উপর থেকে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে।

মানবাধিকারের একটি চক্র জেল থেকে আসামী ছাড়ানো এবং নির্যাতিত মানুষকে আইনী সহায়তা প্রদানের নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। পাশাপাশি সারা দেশ ব্যাপী চলছে তাদের কার্ড বাণিজ্য। যাদের মানবাধিকার সম্ভন্ধে নূন্যতম জ্ঞানও নেই তাদের হাতে মাত্র এক হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে মানবাধিকার কর্মীর আইডি কার্ড।

তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে থানা কমিটি এবং ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলা কমিটি গঠনের অনুমোদনও দেয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্গের ছাতার মতো সারা দেশে খুলে বসেছে শাখা প্রশাখা, এমনও অনেক সংগঠন আছে যারা সরকারের কোন সংস্থারই অনুমোদন না নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু মাত্র প্রেস লেখা আইডি কার্ড কেনাবেচাই যাদের মূল পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানবাধিকার নামক সংস্থায় কাজ করে মুরগী আর পান ব্যবসায়ী, পেশাদার ছিনতাইকারীরা নামের আগে পিছে বসাচ্ছে সাংবাদিক। নিজের নাম লিখতে কলম ভাঙ্গে, সাংবাদিক বলতে গেলে উচ্চারণ করে বসে সামবাদিক, নিজের সংগঠনটির নাম পর্যন্ত বলতে পারে না-তারাই রাতারাতি মানবাধিকার-সাংবাদিক সংগঠনের নেতা বনে গেছেন। ভূয়া সাংবাদিকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে খোদ পুলিশেরও অনেকটা ভুমিকা রয়েছে। কারণ, পুলিশের সঙ্গেই ওইসব ভূয়া ও নামধারী সাংবাদিকদের বেশি সখ্যতা।

এরা প্রায়ই থানার ভিতরে দারোগাদের সাথে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডাবাজিতে মত্ত থাকে। ‘দালাল’ হিসেবে ঘুষ বাণিজ্যে সরাসরি সহায়তা করে, পুলিশের ‘সোর্স’ হিসেবেও তারা বিশ্বস্থ! সারা দেশে ‘ভুয়া মানবাধিকার কর্মি আর ভূয়া সাংবাদিক’দের দৌরাত্ম্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চরমে পৌঁছেছে।

ভুয়া সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ পেতে এবং তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য-সমর্থকরা নিজেদেরকে ‘মানবাধিকার সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়ে নিরীহ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও এন্তার অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিক পরিচয়ে এরা নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। এই চক্রে বিতর্কিত নারী সদস্যও থাকেন। এরা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে ‘প্রেস’ কিংবা ‘সংবাদপত্র’ লিখে পুলিশের সামনে দিয়েই নির্বিঘ্নে দাবড়ে বেড়ায়। এদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনও থাকে চোরাই এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্রবিহীন।

ভূয়া সাংবাদিক আর কথিত মানবাধিকার কর্মিদের নানা অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, সাংবাদিক আর মানবাধিকার নেতার অভাব নেই। এতে করে পেশাদার সাংবাদিকরা আজ নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেন।

ভূয়া সাংবাদিকদের প্রতারণার জাল কোনো এক ছড়াকার টিটকারির সুরেই ছন্দ মিলিয়ে লিখেছেন-

‘হঠাৎ করে এই শহরে এলো যে এক সাংবাদিক
কথায় কথায় তোলে ছবি ভাবখানা তার সাংঘাতিক।

তিলকে সে বানায় তাল-তালকে আবার তিল
চড়ুইকে সে পেঁচা বানায় কাককে বানায় চিল।

পুলিশ দেখে মুখ লুকিয়ে পালায় দিগ্বিদিক
সবাই বলে লোকটা নাকি ভূয়া সাংবাদিক।’

পেশাদার সম্মানিত সাংবাদিকদের জন্য বিষয়টি লজ্জাকর হলেও ছড়া ছন্দের মতই ভূয়া সাংবাদিকরা দেশ জুড়ে বেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ফেলেছে। সাংবাদিকদের মতো বেশভূষায় সেজেগুজে এক শ্রেণীর প্রতারক অলিগলি, হাট-বাজার চষে বেড়াচ্ছেন। পান থেকে চুন খসলেই রীতিমত বাহিনী নিয়ে হামলে পড়ছেন সেখানে।

প্রকৃত ঘটনা কি-সে ঘটনার আদৌ কোনো নিউজ ভ্যাল্যু আছে কি না, সেসব ভেবে দেখার ফুসরৎ তাদের নেই। তাদের দরকার নিজেদের প্রতাপ দেখিয়ে, আতংক ছড়িয়ে টুপাইস কামিয়ে নেয়া। টাকা পকেটে না আসা পর্যন্ত চিল্লাপাল্লা, হুমকি, ভীতি প্রদর্শনের সব কান্ডই ঘটিয়ে থাকেন তারা।

রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত পল্লীর সাধারণ বাসিন্দারা পর্যন্ত কথিত সাংবাদিক কার্ডধারী ভূয়াদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন, তটস্থ থাকছেন। পেটে বোমা ফাটালেও দু’ লাইন লেখার যোগ্যতাহীন টাউট বাটপারের দল চাঁদাবাজিতে সিদ্ধান্ত। ভূয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্য নতুন নয়, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা বেড়ে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সাংবাদিকতার যে মহান পেশা সকল শ্রেণী-পর্যায়ের ঘুষ-দুর্নীতি, অনিয়ম, বিভ্রান্তি, অসঙ্গতির বিস্তারিত তুলে ধরে, এখন সে পেশার নাম ভাঙ্গিয়েই চলছে ভয়ংকর ফাঁকিবাজী, চাঁদাবাজি, জোর-জুলুমের হাজারো কারবার। কারা অপকর্মটি করছেন? অনেকেরই তা জানা আছে। সাংবাদিক না হয়েও সাংবাদিকতার বেশভূষা তাদের মূল পুঁজি। খ্যাত-অখ্যাত একাধিক গণমাধ্যমের ৪/৫টি আইডি কার্ড বুকে পিঠে ঝুলিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় সর্বত্র। যারা পেশাদার সাংবাদিক তাদের কারো না কারো সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে সাইনবোর্ড হিসেবেও ব্যবহার করেন তারা। সম্ভব হলে সাংবাদিকদের কোনো সংগঠনে নিজের নামটা লিখিয়ে নেয়, তা না হলে নিজেরাই ‘সাংবাদিক’ ‘রিপোর্টার’ ‘প্রেসক্লাব’ শব্দ যোগ করে ভূইফোঁড় কোনো সংগঠন খুলে বসে। প্রয়োজনে টাকা-পয়সা খরচ করে রেজিস্ট্রেশনও করিয়ে নেয়।

পেশাজীবী সংগঠন গড়তে, বৈধতা পেতে যেহেতু আলাদা কোনো নিয়ম কানুনের দরকার পড়ে না; সেই সুযোগে কাওরানবাজারের আলু পটলের ব্যবসায়ি, মুগদা-মান্ডার বংশানুক্রমের জেলেও এক মুহূর্তেই সাংবাদিক ফাউন্ডেশন নামক সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন পেয়ে যাচ্ছেন।

তখন তাদের বুলি থাকে অন্যরকম-“আমি সাংবাদিক কি না সেটা আপনার জানার দরকার নাই, আমি সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট। আমি সাংবাদিক বানাই, আমার স্বাক্ষরে আইডি কার্ড দেই- আমার পরিচয় আলাদাভাবে দেয়ার কি আছে? ভূয়াদের এতোসব সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ও কথিত ক্লাব-ইউনিটির দাপ্তরিক প্রতারণার ধকলে নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষজন। প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে মহান সাংবাদিকতার পবিত্র পেশাটিও।

আইন সহায়তা প্রদানের নামে গড়ে তোলা কথিত এক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এক হাজার টাকায় তাদের সদস্যপদ বিক্রি করছে। কোন থানা কমিটি করতে আগ্রহীদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা এবং জেলা কমিটির জন্য ১০ হাজার টাকা ফি আদায় করে নেয়। শর্ত দেওয়া হয়, সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে কোন টাকা আয় হলে তা আলোচনার মাধ্যমে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। আজীবন সদস্য হতে হলে দিতে হবে অন্তত ১০ হাজার টাকা। সংগঠনের কোন সদস্য সাংবাদিক হতে চাইলে ‘সাংবাদিক কার্ড’ বাবদ দিতে হবে আলাদা টাকা।

শুধু এই ফাউন্ডেশনই নয়, এভাবে সাধারন মানুষের সঙ্গে মানবাধিকারের নামে প্রতারনা করছে দেড় শতাধিক তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন। জয়েন্ট স্টক কোম্পানী ও ফার্মস এর দপ্তর থেকে সোসাইটি এ্যাক্টের অধিনে নিবন্ধন নিয়ে মানবাধিকারের নামে প্রতারনা করছে বিভিন্ন চক্র। এই প্রতারক চক্রের একটি বড় অংশ বিভিন্ন অখ্যাত আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কার্ডধারী সাংবাদিক।

কনজুমার রাইটস সোসাইটি নামে একটি সংগঠনের প্রাদুর্ভাব রয়েছে দেশজুড়ে। সোসাইটি এ্যাক্টের অধিনে নিবন্ধন নেওয়া এই সংগঠনের আইডি কার্ডের উপরে বড় করে লেখা রয়েছে “গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা”। গভ: রেজি: এস-৭০০৬ (১৯৪)/০৭, অফিস- ১২০/এ মতিঝিল সি/এ (চতুর্থ তলা) ঢাকা।

একই ভাবে মানবাধিকার ও পরিবেশ সাংবাদিক সোসাইটি নামেও আরেকটি সংগঠন সদস্যদের ‘মানবাধিকার সাংবাদিক’ হিসেবে পরিচয়পত্র দেওয়ার নাম করে এক হাজার টাকা এবং বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কমিটি গঠন করে আঞ্চলিক পরিচালক, সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদের জন্য ৩ হাজার টাকা করে আদায় করছে।

মানবাধিকার সংগঠনের নামে প্রতারনার অভিযোগে ইতিপূর্বে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) থেকে ভুয়া সাংবাদিক ও তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স ফাউন্ডেশন’ এর চেয়ারম্যান এসএম হুমায়ুন কবীরসহ তিনজনকে আটক করেছিল পুলিশ। এই সংগঠনটিও ঢাকাসহ সারাদেশে টাকার বিনিময়ে প্রায় ১৫ হাজার ব্যক্তিকে ‘প্রেস’ লেখা আইডি কার্ড বিতরণ করেছে।

একইভাবে ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস সোসাইটি, সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, আর্ন্তজাকিত সাংবাদিক মানবাধিকার সোসাইটি, জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি, বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটি, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি, কনজুমার এন্ড প্যাসেঞ্জার রাইটস প্রোটেক্ট সোসাইটি, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস জার্নালিস্ট এন্ড কালচারাল সোসাইটি নামের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নানারকম দৌরাত্ম্য লক্ষ্য করা যায়। কিম্ভূতকিমাকার নামধামের এসব মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকান্ড মনিটরিং না করায় বাধাহীনভাবে তাদের অপকর্ম বেড়েই চলেছে।

অন্যদিকে, রাজধানীর কদমতলী এলাকায় মিরাজনগর মিজানের বাড়ীর ২য় তলায় গজিয়ে উঠেছে আরেক ভূয়া সংগঠন আর্ন্তজাতিক এই সংগঠনটির সরকারী কোন অনুমোদন না থাকলেও লেথা রয়েছে আর্ন্তজাতিক সনদপ্রাপ্ত, এই সংগঠনের মালিক এলাকার সাধারন মানুষকে সদস্য করা তাদের পাশে দাড়ানো এবং উপকার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা, অভিযোগ রয়েছে এই সংগঠনের মালিক বেশীদিন এক স্থানে অফিস নিয়ে থাকতে পারেনা তার কারন কিছুদিনের মধ্যেই তার আসল রুপ জানতে পারে আর সে জন্য সে রাতের আধারে পালিয়ে গিয়ে অন্যস্থানে ভিন্ননামে সংগঠন খোলে প্রতারনা করে আসছে প্রতিনিয়ত।

একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রস্তুতের নিমিত্তে গত কয়েকদিন রাজধানীর থানা প্রাঙ্গনগুলোতে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরেজমিনকালে এক হতাশাব্যঞ্জক চিত্রই বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন নামের হরেক আকৃতির পত্রিকা আর মানবাধিকার সংগঠনের ‘সাংবাদিক কার্ডধারীরা’ থানা-পুলিশের দালালি ও তদবির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।

অনেকে আইডি কার্ড ঝুলিয়ে প্রকাশ্যেই পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি’র সোর্সের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। সংগঠনগুলো থেকে দেয়া আইডি কার্ডসমূহে ‘মানবাধিকার লংঘন সংক্রান্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা’ ফিল্ড অফিসার, জোনাল অফিসার (ইনভেস্টিগেশন), থানা কমিটির সেক্রেটারী, মহানগর কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, কো-অর্ডিনেটর (তদন্ত সেল), পরিচালক (তদন্ত) ইত্যাদি পদবী লেখা থাকে। সন্ধ্যার পর একেকটি থানা চত্বরে, আশপাশের চা দোকানে, দারোগাদের টেবিলে টেবিলে ১৫/২০ জন কথিত সাংবাদিক ও তথাকথিত মানবাধিকার কর্মির জটলা থাকে।

থানা, ফাঁড়ি, পুলিশ ষ্টেশন কেন্দ্রিক তথাকথিত সাংবাদিক আর মানবাধিকার তদন্ত কর্মকর্তার সংখ্যা কত-তা হিসেব কষে বলা মুশকিলই বটে। থানায় থানায় গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ কেন্দ্রিক কি কাজ তাদের ?

সরেজমিন অনুসন্ধানকালে যে দৃশ্যপট দেখা গেছে তা সবিস্তারে উল্লেখ করে ঘৃণার বিস্তার ঘটানো অবান্তর। শুধু এটুকু উল্লেখ করা জরুরি যে, এদেশে কামাল লোহানী, আকরাম হোসেন খাঁন, রেহমান সোবহান এর মতো ব্যক্তিত্বও মানবাধিকার কর্মি- অন্যদিকে যাত্রাবাড়ীর হেরোইনসেবী, পেশাদার গ্রিলকাটা চোর হিসেবে খ্যাত মনোয়ার হোসেন মানু মিঞাও হয়েছেন মানবাধিকার রক্ষা পরিষদের তদন্ত সেলের কো-অর্ডিনেটর।

একইভাবে এলিনা খান’রা যখন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন- তখন এর বিপরীতে মিরপুর থানার তালিকাভুক্ত দেহ ব্যবসায়ি, পর তিন বার গ্রেফতার হয়ে জেল খাটা আসামি আইরিনও শক্ত অবস্থান নিয়ে মানবাধিকারের আইডি কার্ড ব্যবহার করছেন।

আইরিনের চাররঙা ভিজিটিং কার্ডে লাল হরফে লেখা আছে ‘মাদক রোধ ও মানবাধিকার সংঘ’, রেজিঃ নং-। নিচে মোটা অক্ষরে আইরিন সুলতানা’র পদবীর ঘরে লেখা রয়েছে যুগ্ম সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, সদস্য সচিব-ঢাকা মহানগর কমিটি এবং ভাইস চেয়ারম্যান-মিরপুর থানা কমিটি।

সম্প্রতি আইরিনের বাসা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন জন দেহজীবি ও চার জন খদ্দেরকে অসামাজিক কার্যকলাপরত অবস্থায় গ্রেফতার করে। তাদেরকে ছাড়ানোর জন্য আইরিন থানার ভিতরে ঢুকে তদবির ছোটাছুটিতে ব্যস্ত ছিলেন।

তদবিরকালে থানা পুলিশের কোনো কোনো কর্মকর্তাকে তিনি টাকা দিয়ে ম্যানেজ করছিলেন, আবার কোনো কোনো কর্মকর্তার হাতে নিজের ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে হুমকি ধমকিও দিচ্ছিলেন।

কী সেলুকাস !! কত বৈচিত্য আর বিচ্যুতিতে ভরা প্রিয় বাংলাদেশ !

তথ্যসূত্র: নিউজ প্রতিদিন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.

%d bloggers like this: