Take a fresh look at your lifestyle.

চীনের নতুন ভাইরাস এবার যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা দিলো,

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

চীনের ‘রহস্যময়’ নতুন ভাইরাসে সংক্রমিত এক রোগী যুক্তরাষ্ট্রেও শনাক্ত হয়েছে। নতুন এই করোনা ভাইরাসে প্রথম কোনো রোগী সংক্রমিত হয়েছে বলে শনাক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে এই ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা হয়।

ভাইরাসটি চীনের উহান শহর থেকে ছড়ায়। এখন পর্যন্ত ৩০০ জন এতে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। তাঁরা সবাই চীনের নাগরিক।

যুক্তরাষ্ট্রের আগে থাইল্যান্ডে দুজন এবং জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাঁরা সবাই উহান থেকে ফেরেন।

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি) জানিয়েছে, চীন থেকে সিয়াটলে আসা এক মার্কিন অধিবাসী এ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। তিনি ৩০ বছর বয়সী এক পুরুষ। গত ১৫ জানুয়ারি তিনি উহান থেকে সিয়াটলে ফেরেন।

সিডিসি এক বিবৃতিতে জানায়, ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে ওই রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর ভ্রমণ ইতিহাস এবং রোগের লক্ষণ দেখে স্বাস্থ্যবিষয়ক পেশাজীবীরা তাঁকে নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করেন। পরে গবেষণাগারে পরীক্ষা ও ক্লিনিক্যাল নমুনা থেকে ২০ জানুয়ারি ভাইরাস আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

ভাইরাসের ঘটনায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উত্তর কোরিয়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য তাদের সীমান্ত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান ও জাপান উহান থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং নিউইয়র্ক বিমানবন্দরেও গত সপ্তাহ থেকে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই সপ্তাহে শিকাগো ও আটলান্টা বিমানবন্দরে এই পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার চীন প্রথম স্বীকার করে ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। এর আগে চীন দাবি করেছিল, ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষ নয়, প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ পায়নি তারা। আর ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে সামুদ্রিক খাবার থেকে। তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা শুরু থেকেই ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানান। তাঁদের হিসাবে চীন যা বলছে, তার চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।

এর আগে রোগীর কাছ থেকে ভাইরাসটির নমুনা নিয়ে পরীক্ষার পর চীন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে সংক্রমণটি করোনা ভাইরাস। এ ধরনের ভাইরাসগুলো ব্যাপক হারে থাকলেও নতুনটিসহ মাত্র সাতটি মানুষকে সংক্রমিত করে বলে জানা গেছে। করোনা ভাইরাস সাধারণ মানুষকে ঠান্ডাজনিত রোগে ভোগায়। তবে করোনা ভাইরাসের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত সিভিয়ার অ্যাকুয়েট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ভাইরাস মৃত্যুর কারণও ঘটায়।

২০০২ সালে চীনে একবার সার্স ভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ওই সময় সার্স-আক্রান্ত ৮ হাজার ৯৮ জনের মধ্যে ৭৭৪ জন মারা যায়। নতুন ভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মানবদেহের জন্য যেকোনো করোনা ভাইরাসের তুলনায় এটি সার্সের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মেলে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে কারও কারও নিউমোনিয়া হয় এবং তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তিদের নিউমোনিয়া ধরনের অসুস্থতা ছিল।

বেইজিং ও সাংহাইসহ চীনের বড় শহরগুলোতে ২৯১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই উহান শহরের। শহরটির ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দা এখন এই প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিতে রয়েছে। এই রোগ প্রথম ধরা পড়ে গত বছর। রোগের প্রাদুর্ভাব সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজার থেকে হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই বাজারে জীবন্ত সামুদ্রিক প্রাণীও বিক্রি হয়।

নতুন ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘অরক্ষিত’ অবস্থায় প্রাণীদের সরাসরি সংস্পর্শে না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। আর মাংস ও ডিম ভালোভাবে রান্না করে খেতে বলেছে। পাশাপাশি ঠান্ডা বা জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির খুব কাছাকাছি না যেতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাসটিতে সংক্রমণের লক্ষণ হচ্ছে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, জ্বর, কাশি, ঘন ঘন নিশ্বাস নেওয়া ও নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.

%d bloggers like this: