Take a fresh look at your lifestyle.

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ধর্ষণের শিকার পঞ্চম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রী এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত ধর্ষক ইয়াছিন মন্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে রাজবাড়ীর আদালতের নির্দেশে ইয়াছিনকে জেলহাজতে, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভিকটিম ওই ছাত্রীকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় গোয়ালন্দঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শগ্রাম মহল্লার মৃত নবু মন্ডলের ছেলে দুই সন্তানের জনক ইয়াছিন মন্ডল (৩৪)। এলাকায় সে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। এদিকে একই মহল্লার হতদরিদ্র এক রিকশাচালকের ১২ বছরের মেয়েটি স্থানীয় ইদ্রিসিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার মা এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। কয়েক মাস আগে কোনো একদিন রাত ৮টার দিকে ফুফুর বাড়িতে প্রাইভেট পড়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল ওই ছাত্রী। এ সময় প্রতিবেশী কাঠমিস্ত্রি ইয়াছিন মন্ডল হঠাৎ এসে ওই ছাত্রীর পথরোধ করে। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে নিজ বাড়ির রান্নাঘরের ভেতরে নিয়ে যায় ইয়াছিন। সেখানে দড়ি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ওই শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ইয়াছিন মেয়েটিকে বলে, ‘এ ঘটনা কাউকে জানাবি না। জানালে আমি নিজ হাতে তোকে ও তোর ছোট ভাইকে এক সঙ্গে জবাই করে মেরে রাস্তার পাশের খাদে লাশ ফেলে দেব’।

ধর্ষকের এমন হুমকিতে ভয় পেয়ে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রাখে মেয়েটি। ঘটনার কয়েক মাস পর প্রতিদিনের মতো গত ২৯ জানুয়ারি সকালে মাদরাসায় গিয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অ্যাসেমব্লিতে দাঁড়িতে জাতীয় সংগীত গাইছিল ওই ছাত্রী। এ সময় সে হঠাৎ মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যায়। উপস্থিত শিক্ষকগণ সঙ্গে সঙ্গে ওই ছাত্রীকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে পরিবারের লোকজন গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মেয়েটিকে ফরিদপুরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে মেডিক্যাল চেকআপ করান। তখন চিকিৎসকের রিপোর্টে পরিবারের লোকজন প্রথম জানতে পারেন যে, ১২ বছরের ওই শিশুটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্ব। এতে মেয়েটিসহ তার পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। পাশাপাশি এলাকার লোকমুখে বিষয়টি জানাজানি হয়।

এদিকে এলাকার সুযোগসন্ধানী একদল লোক বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস-মিমাংসা করার জন্য জোর চেষ্টা চালাতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এলাকার অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোনকল করে বিষয়টি জানান। পরে ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ পেয়ে ওই রাতেই (মঙ্গলবার) আদর্শগ্রাম মহল্লায় অভিযান চালায় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। এ সময় অন্তঃসত্ত্বা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত ধর্ষক ইয়াছিন মন্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার বিচার চেয়ে ওই রাতেই ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে ধর্ষক ইয়াছিন মন্ডলের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার ইয়াছিনকে আজ বুধবার দুপুরে রাজবাড়ীর আদালতে নেওয়া হলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ওই আদালত। পাশাপাশি ভিকটিম ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা পঞ্চম শ্রেণির ওই মাদরাসাছাত্রী বুধবার সকালে গোয়ালন্দঘাট থানায় বসে পুলিশ ও সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামের সম্পর্কে ইয়াছিন মন্ডলকে আমি চাচা বলে ডাকতাম। কিন্তু জোর করে ওই আমার এমন সর্বনাশ করেছে। মানুষরূপী ওই জানোয়ারটার আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

গোয়ালন্দঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ইয়াছিন মন্ডল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.

%d bloggers like this: