চীনের কারণে আবারও রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার বিষয়ে কোনো অভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার গণহত্যার মামলায় আইসিজের অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের আদেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে স্থায়ী সদস্য চীন এবং অস্থায়ী সদস্য ভিয়েতনামের বিরোধিতায় যৌথ বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে একমত হতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এপি আজ বুধবার এ তথ্য জানায়।
তবে নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো যৌথ বিবৃতি প্রচারের বিষয়ে একমত হতে ব্যর্থ হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আলোচনার পর একটি বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সদস্য ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও এস্তোনিয়ার পাশাপাশি সাবেক সদস্য পোল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আদেশ মেনে চলতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওই পাঁচ দেশ বলেছে, আদালতের আদেশ মেনে চলার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অতীতের ধারায় সবশেষ বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষেই জোরালো অবস্থানে থেকেছে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের অন্যতম চীন। দেশটির সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম। গত আড়াই বছরের মতো এখনো রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারের সঙ্গ ছাড়ছে না চীন। ফলে রোহিঙ্গা গণহত্যা প্রতিহত করাসহ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের সুরক্ষায় জাতিসংঘের আদালত আইসিজে গত ২৩ জানুয়ারি যে আদেশ দিয়েছে, তা বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি হলো।
এদিকে ইইউর পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে, মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নিতে দেশটির কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। রাখাইনের পাশাপাশি কাচিন ও শান রাজ্যেও সংঘাতের মূল সমস্যার সমাধান করতে হবে মিয়ানমারকে। মানবাধিকার ও মানবিক আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনা এই প্রক্রিয়ার অংশ।
ইইউয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণভাবে এবং টেকসই উপায়ে মিয়ানমারের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.