চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আরো ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে এ সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ২৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আর এদের অধিকাংশ হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। সেখানে এ ভাইরাস বসচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। খবর এএএফপি’র। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন তাদের প্রতিদিনের হালনাগাদ করা তথ্যে জানায়, চীনে নতুন করে আরো ৮৮৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এত প্রাণহানির পরও চিকিৎসাবিজ্ঞানে নিঃশব্দ এ ঘাতক দমনে কোনো প্রতিষেধক উদ্ভাবন হয়নি অদ্যাবধি। জাপান উপকূলে নোঙর করে থাকা মার্কিন প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে করোনায় আক্রান্ত যাত্রীদের মধ্যে নতুন করে অশীতিপর এক নারী ও এক পুরুষের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে এনএইচকে টেলিভিশন।
এর আগে ইরানে মৃত্যু হয়েছে আরো দুজনের। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তাদের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাতে, গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির মূল ভূখণ্ডে ৩৯৪ জনের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৪৯ জন।
রয়টার্স জানায়, গত দেড় মাসের মধ্যে গতকালই সবচেয়ে কম সংখ্যক নতুন রোগী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা
এখন ৭৪ হাজার ৫৭৬ জন। চীনের বাইরে আরো ৩০টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৫ হাজার। গত সোমবার চীনে মোট ১১৪ জনের মৃত্যু ঘটে এ ভাইরাসে, যার মধ্যে হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন ১০৮ জন। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে যে ১০ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে জাপানে তিনজন, হংকং ও ইরানে দুজন করে এবং ফিলিপাইন, ফ্রান্স ও তাইওয়ানের একজন করে। এদিকে, ডায়মন্ড প্রিন্সেসে মারা যাওয়া দুই যাত্রীকে গত সপ্তাহেই জাহাজ থেকে নামিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। সেখানেই তাদের মৃত্যু ঘটে বলে জানায় বিবিসি। এ দুজনই জাপানের নাগরিক। তাদের মধ্যে ৮৭ বছর বয়সী পুরুষ যাত্রী হৃদরোগে ও ব্রঙ্কাইটিসে ভুগছিলেন আর ৮৪ বছর বয়সী নারী যাত্রীর মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া হিসেবে উল্লেখ করে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এর পাশাপাশি ডায়মন্ড প্রিন্সেসে কাজ করতে গিয়ে দেশটির আরো দুজন সরকারি কর্মকর্তা সংক্রমণের শিকার হন। এর আগে জাপানের আরো তিন কর্মকর্তা ওই জাহাজে কাজ করতে গিয়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হন। জাহাজটিতে যাত্রী হিসেবে ছিলেন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশের লোক। এই জাহাজটিই বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ ছড়ানোর উৎস হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা করছিলেন শীর্ষস্তরের বিশেষজ্ঞরা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.