চলতি বছরের মধ্যেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।তিনি বলেন, দুই দেশে নদীর পানির হিস্যা বন্টনের জন্য ভারত সর্বাত্মক কাজ করবে। আমরা ইতোমধ্যে এ নিয়ে দুই দেশ অনেক কাজ করে যাচ্ছি।
সোমবার (২ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ-ভারত : একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে শ্রিংলা এ কথা বলেন।
শ্রিংলা বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই মাসে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা এই সফরের প্রত্যাশায় রয়েছি। কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই সম্পর্কের প্রতি অগ্রাধিকার দেন এবং এর চেয়েও বড় কারণ, বঙ্গবন্ধু একজন বিশ্বনন্দিত নেতা এবং বাংলাদেশ ও আমাদের উপমহাদেশের মুক্তির প্রতীক। ভারতে তার নাম বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বাংলাদেশে যেমন সম্মান লাভ করেন তেমনি ভারতেও তিনি সমান শ্রদ্ধার পাত্র। সুতরাং আমি এই জ্ঞানী, নির্ভীক, দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং সর্বোপরি এমন একজন বীর, যিনি শোষণের হাত থেকে একটি জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন, সেই মহান বঙ্গসন্তানের জন্মশতবর্ষে আপনাদের শুভকামনা জানাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরও জাতীয় বীর। তাই বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে যৌথ প্রযোজনায় বিশেষ চলচ্চিত্র নির্মাণসহ জন্মশতবর্ষের বিভিন্ন আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।
আরও বলেন, খুব সাধারণভাবেই, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শক্তিশালী, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমাদের পূর্ণ সমর্থন একবারেই ভারতের জাতীয় স্বার্থে। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচক, যেমন: শিশুমৃত্যু থেকে নারী শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য থেকে স্বাক্ষরতা ইত্যাদি উন্নয়নে আপনাদের অভূতপূর্ব সফলতা বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি এনে দিয়েছে। আজকে এশিয়ার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ, যেটা সত্যিই প্রশংসনীয় অর্জন।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের ‘আমরা সবাই সুখ-দুঃখ সমানভাবে ভাগ করে নিই’ বাণী উদ্বৃত করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ বাণী যেন আমাদের সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে যে, এই বিশ্বায়নের যুগে সুখ-দুঃখ কোনো সীমান্ত মানে না এবং সবার দ্বারপ্রান্তেই আসে। বাংলাদেশের প্রতি আমাদের মনোভাব সবসময় এই চেতনা দিয়েই প্রকাশিত হবে। আমার বিশ্বাস, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সফরটিতে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নিরন্তর শুভেচ্ছা, বিশ্বাস ও সম্মানের পূর্ণ প্রতিফলন হবে।
মুজিববর্ষ উদযাপনে বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ মার্চ ঢাকায় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে মোদির।
এর আগে শ্রিংলা ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেলেও পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে এটিই তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। ব্যস্ত সফরসূচি শেষে মঙ্গলবারই ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি।
দেশদর্পণ/আহা/জাগ/ম
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.