করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও ছুটির কারণে কার্যত ‘লকডাউনে’-এর মুখে পড়েছে সারাদেশ। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউ রাস্তায় বের হলে জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। কোথাও কোথাও কান ধরে ওঠবস, বা দু-চার ঘা সাজাও মিলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে, খোলেনি কোনো দোকান-পাট।
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অস্বাভাবিক নীরবতা সবখানে। মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যরা পাহারা দিচ্ছেন, যানবাহন থামিয়ে যাত্রী ও চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারের কুতুবখালী পয়েন্টে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপ, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা যায়। তবে পুলিশ চেক পোস্টে প্রতিটি যানবাহনকেই আটকানো হয়। নিয়ম না মেনে রাস্তায় বের হওয়ায় এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে কান ধরে ওঠবস করাতে দেখা যায় সেখানে। মুখে মাস্ক না থাকায় কয়েকজন মোটরসাইকেল চালককে পিটুনিও দেয়া হয়।
দুপুরে খিলগাঁও মডেল কলেজের সামনে কয়েক যুবককে আড্ডা মারতে দেখে টহল পুলিশ দলকে ধাওয়া দেয়। পুরান ঢাকার ইসলামবাগে চায়ের দোকান খোলা রাখায় এক দোকানিকে ব্যাপক পিটুনি দেয় পুলিশ। রামপুরা এলাকায় মাস্কের পাশাপাশি হ্যান্ড গøাভস না পরে বের হওয়ায় তাদেরও বকাঝকা দিয়ে বাসায় ফেরত পাঠাতে দেখা গেছে। গুলিস্তান, নবাবপুর, ধোলাইখাল, সদরঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনের ব্যস্ততা ছিল না। অলিগলিতেও খোলেনি কোনো দোকানপাট। শুধু কিছু ওষুধের দোকান ও নিয়মিত বাজার খোলা থাকলেও ছিল না লোকজনের ভিড়। ঢাকা মেডিকেল ও মিটফোর্ড হাসপাতালেও রোগী ভর্তি কমেছে ব্যাপকভাবে। এসব হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সদের পিপিই পড়ে বসে গল্প করতে দেখা গেছে।
১০ দিনের লকডাউনের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি স্বল্প বা দূরপাল্লার কোনো বাস, ট্রেন ও লঞ্চ। দেশের সব অভ্যন্তরীণ ও দুটি বাদে সব আন্তর্জাতিক রুটেই যাত্রীবাহী বিমান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম অফিস প্রধান সমরেশ বৈদ্য জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য প্রশাসন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার অনেকটাই সুফল পাওয়া যাচ্ছে। সুনসান রাস্তাঘাট। যানবাহনের জটতো দূরের কথা যানবাহনের দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না। অলিতে গলিতে কোথাও যুবক-তরুণ-কিশোরদের কিছুটা জটলা থাকলেও তাও খুব একটা না। এমনকি চায়ের দোকান পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে কখনো সেনাবাহিনীর গাড়ি, কখনো র্যাবের গাড়ি আবার কখনো পুলিশের গাড়ির টহল চলছে নগরীর মূল রাস্তাগুলোতে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, চট্টগ্রামে মোট ৯৬৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন অবস্থানের পর ১০ জনের শরীরে করোনাসংক্রান্ত কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি বলেও জানান তিনি। চট্টগ্রামের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সংকুলান না হলে ৬টি বেসরকারি ক্লিনিকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন। এদিকে, ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক ডা. এম এ হাসান জানান, গতকাল পর্যন্ত তারা ৮ জনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তা রাজধানী ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠিয়েছেন।
দুপুরে নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় ঘোরাঘুরির সময় কয়েকজন তরুণ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীনকে দেখে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়। ওসি তাদের থামান এবং অভিভাবকদের কাছে ফোন করে তাদের সন্তান বাইরে ঘোরাঘুরি করছে কেন জানতে চান। ওই তরুণরা ভুল স্বীকার করেন এবং বাসা থেকে বের না হবার প্রতিশ্রæতি দেন।
ওসি মহসীন বলেন, এভাবেই বুঝিয়ে-শুনিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি, তাতে কাজও হচ্ছে। ফাঁকা শহরে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। কেউ কেউ সুরক্ষার পোশাকে, কেউ আবার সাধারণ ইউনিফর্মে। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা সেনাবাহিনীকে নিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি তদারক করছেন।
নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে বাইরে ঘোরাঘুরি করায় বিদেশফেরত একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন আহমেদ অনিক। হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার সামনে দরবার হোটেল ও শাহজাহান হোটেল খোলা রাখায় সেগুলোতে তালা লাগান ইউএনও মোহাম্মদ রুহুল আমিন। তিনি জানান, দরবারের মালিক মো. আজাদকে ৫ হাজার টাকা এবং শাহজাহানের মালিক মো. সরওয়ারকে ২ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের টিম নগরীর সিনেমা প্যালেস এলাকায় অগ্নিনির্বাপক গাড়ি দিয়ে জীবাণুনাশক পানি ছিটিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিরর জহরলাল হাজারী বললেন, আন্দরকিল্লাহ্ ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত জীবাণুনাশক পানি ছিটানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
রাজশাহী থেকে প্রতিবেদক সাইদুর রহমান জানান, ছুটির প্রথমদিন গতকাল জনশূন্য হয়ে পড়ে রাজশাহী মহানগরী। দোকানপাট, ব্যবসা-বিপনিবিতান সবকিছুই একেবারে বন্ধ। পিচঢালা পাকা রাস্তায় নেই গাড়ি, জনমানবশূন্য মাঠ-প্রান্তর, পথ আর রাস্তাঘাট। যেন উত্তরাঞ্চলের পদ্মাপাড়ের বিভাগীয় এই শহরে অঘোষিত কারফিউ চলছে।
এদিকে সকাল থেকেই করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করতে রাজশাহীর মাঠে নামে সেনাবাহিনী। একজন মেজরের নেতৃত্বে মাঠে রয়েছে সেনাসদস্যদের একটি টিম। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও মাস্ক পরাসহ সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাইকিং করতে দেখা যায় তাদের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট, শিরোইল বাসস্ট্যান্ড, শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, বর্ণালী মোড়, লক্ষীপুর মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো ছিল জনমানবশূন্য। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন, চায়ের দোকানসহ সবকিছুই। তবে খাবার, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা সংখ্যা ছিল একেবারেই কম।
নগরীতে রিকশা ও অটোর সংখ্যাও ছিল নগন্য। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীর রাস্তায় গাড়ির মাধ্যমে ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক ওষুধ।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, বুধবার থেকেই নগরী বেশ ফাঁকা হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার পুরো নগরীতে লোকজনের উপস্থিতি একেবারে ছিল না বললেই চলে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ঘরে থাকতে যে অনুরোধ বারবার করা হচ্ছিল, তা এখন বেশ কার্যকর। আশা করি- মানুষ আরো সচেতন হয়ে উঠবে এবং সবাই মিলে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
সিলেট ব্যুরোর জাহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপের আগে থেকেই এক ধরনের সেলফ লকডাউনে রয়েছে সিলেট। অন্য দিনের মতো চা, ফুচকা, স্ট্রিট কিংবা বাহারি খাবারের টং দোকান বন্ধ। নেই অকারণ আড্ডা, আর অহেতুক জনসমাগম। নিত্যপণ্যের কয়েকটি দোকান বা ফার্মেসি খোলা থাকলেও তাতে কোনো ক্রেতা নেই বললেই চলে। ফাঁকা জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, লামাবাজার, মদিনা মার্কেটসহ নগরীর সব এলাকা। নগরীর জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টগুলোও বন্ধ রয়েছে একযোগে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের ১০টি টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তাদের সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী। সিলেট নগরীর পাশাপাশি কয়েকটি উপজেলাতেও জেলা প্রশাসনের এই টিমগুলো কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, যাদের কোয়ারেন্টাইনের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তাদের কোয়ারেন্টাইন বিধি মানাতে এবং অপ্রয়োজনে জনসাধারণের বাইরে না বের হওয়া নিশ্চিত করতেই এই অভিযানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে কানাইঘাট উপজেলায় দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেয়ায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দোকানপাট বন্ধ করা হয় বলে জানান কানাইঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম খান।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন জানান, বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। যে দুয়েক জায়গায় খোলা রাখার খবর পাচ্ছি, সেখানে আমাদের টিম পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরাও তা মানছেন কিনা তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বরিশাল থেকে প্রতিবেদক এম মিরাজ হোসাইন জানান, বরিশালের রাস্তাঘাট অনেকটাই জনমানব শূন্য। বাস টার্মিনাল-নদী বন্দর, এমনকি নগরীর অভ্যন্তরেও সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। ওষুধ এবং মুদি দোকান ছাড়া বন্ধ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। করোনা সংক্রমণ এড়াতে জনগণকে নিজ নিজ ঘরে রাখতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট স্থাপন করে জনসমাগম রোধে কাজ করছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার থেকে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার লঞ্চ-বাস চলাচল বন্ধ হলেও বিকল্প যানবাহনে মানুষ আসছিল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার হাতেগোনা দুয়েকটি রিকশা ও মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার রাতে মতবিনিময় সভায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের এমপি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বৃহস্পতিবার থেকে সব ধরনের যানবাহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং জনসমাগম বন্ধের কঠোর নির্দেশ দেন। এরপর সকাল থেকে বরিশাল নগরীসহ সর্বত্র জোরদার টহল শুরু করে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জেলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও স্থাপনা ঘিরে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হয়েছে।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের নির্দেশে ওয়াটার ক্যানন দিয়ে নগরীতে সকাল সন্ধ্যা জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। বিএমপির সহকারী কমিশনার আবদুল হালিম জানান, প্রতিদিন এ স্প্রে কার্যক্রম চলাকালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে তদারকি করছেন।
রংপুর থেকে প্রতিবেদক হাসান গোর্কি জানান, নগরীর সিটি বাজারসহ পাড়া-মহল্লার কিছু দোকান খোলা ছিল। তবে লোকজন ছিল সীমিত। গতকাল নগরীসহ উপজেলা পর্যায়ে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী। একইভাবে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, র্যাব ও পুলিশ বাহিনীও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেনা সদস্যরা নগরীর পায়রা চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়। এ সময় রেলস্টেশন এলাকার প্লাটফর্ম, রেলস্টেশন চত্বর ও বাজার এলাকায় লোকসমাগম বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। মাইকিং করে লোকজনকে ঘরে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয় র্যাব-পুলিশ।
রাস্তাঘাট করোনা ভাইরাসমুক্ত রাখতে জলকামান দিয়ে ব্লিচিং পাউডার ও স্যাভলন ছিটিয়েছে সিটি করপোরেশন। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দিয়ে স্যাভলনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে তা স্প্রে করা হয়।
খুলনা প্রতিনিধি বাবুল আকতার জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মহানগর ও জেলার সড়ক এবং অলি-গলিতে টহল দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে মহানগরীর ময়লাপোতা, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, ডিসি অফিস, নিরালা এলাকাসহ মাইকিং করা হয়। অন্যদিকে সকাল থেকেই খুলনা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের কাছে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এদিকে কেএমপি ও জেলা পুলিশের বিশেষ টিমকে মাঠে কাজ করতে দেখা যায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোটরসাইকেলের মাধম্যে প্রতিটি অলি-গলিতে গিয়ে পুলিশ দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ও মানুষকে নিজ ঘরে থাকার আহ্বান জানায়।
এ প্রসঙ্গে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনীর ৬ প্লাটুন সদস্য মাঠে নেমেছেন। প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা মাঠে কাজ করছেন। প্রয়োজনে আরো সেনা সদস্য মাঠে নামানো হবে।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খাঁন জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সেনাবাহিনী ও র্যাবের মাইকিং এবং টহলের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন নগরীর প্রতিটি পাড়া মহল্লায় লিফলেট বিতরণ ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে। নগরীর প্রধান সড়কের মোড়ো মোড়ে ক্যাম্প গঠন করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। এ এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। যেখানেই অনিয়ম হচ্ছে সেখানেই সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহল টিম একযোগে কাজ করছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই ঘর থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছে না। নগরীর মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, মিন্টু কলেজ বাজার ও চরপাড়ার বাজারগুলোতে কাঁচাবাজার, মাছ তরকারি, মুদির দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। বাকি সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।
ref: bhorer kagoj
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.