অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পাপুল এরই মধ্যে বিদেশে অবস্থান করায় তার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আর দেশে এসে থাকলে যেন বিদেশ যেতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
বুধবার (১৭জুন) পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশন বরাবর পাঠানো চিঠিতে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় অনুরোধ জানিয়েছে দুদক। অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ অনুরোধ করা হয়েছে। সংস্থাটির পরিচালক (জনসংযোগ কর্মকর্তা) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদকের কাছে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার তথ্য থাকায় এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ৯ জুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের পাঠানো চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টিআইএন নম্বর, আয়কর রিটার্নসহ ব্যক্তিগত সব নথিপত্র তলব করা হয়েছিল। এরই মধ্যে কিছু নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। তবে সব নথিপত্র এখনো পাওয়া যায়নি। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে লোন বরাদ্দ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানিল্ডারিং করে বিদেশে পাচার এবং শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দুদকের অনুসন্ধানধীন রয়েছে।
গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পাপুলকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেশটিতে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর পাপুলকে আদালতে হাজির করলে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
কুয়েতের বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ‘মানব ও অর্থপাচারসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, এমন কয়েক’শ ব্যক্তির তালিকা করেছে কুয়েত সরকার। সেই তালিকা ধরেই সম্প্রতি বিতর্কিত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ। সেই অভিযানেই গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের এমপি পাপুল।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.