Take a fresh look at your lifestyle.

আবারও প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন খালেদার পরিবার

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৬ মাসের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। নতুন জামিনের জন্য ফের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তার পরিবার। জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে খালেদাকে বিদেশে নিতে লিখিত আবেদনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি চাইবে পরিবার। সাক্ষাতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি শুভেচ্ছা চিঠিও নিয়ে যাবেন তারা। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়ার শেষ হওয়ার আগেই মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করবে পরিবার। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৪ আইনজীবী খালেদা জিয়ার পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করে জামিনের মেয়াদ বাড়াতে আবেদনের একটি খসড়া তৈরি করেছেন। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে। তবে এসব বিষয়ে দলের নেতারা সম্পূর্ণ অন্ধকারে। তাদের বক্তব্য দলীয় প্রধানের বিষয়ে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত তার পরিবারের। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।

জানতে চাইলে, খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, ম্যাডাম ও তার পরিবার তো উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে চাইবেন। কারন, তার আত্মীয়রা স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখিয়ে মুক্তির আবেদন করেছেন, সরকারও মানবিকভাবে তা গ্রহণ করেছে। মুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল, ভালো চিকিৎসা। কিন্তু সেই সুযোগ হয়নি। এখন তার পরিবার থেকে আবেদন করা হবে এবং সরকার সেটাকে ইতিবাচক হিসেবে নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর এটিতে আইন মন্ত্রণালয় মতামত দেবে। মুক্তি দেয়ার বিষয়টি সরকারের এখতিয়ার। সরকার চাইলে নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেয়া হতে পারে।

সূত্র জানায়, উন্নত চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার পথ সুগম হচ্ছে। অসুস্থতা বিবেচনায় তাকে বিদেশ যেতে দিতে সরকারের হাইকমান্ডের মনোভাব ইতিবাচক বলে জানা গেছে। খালেদা জিয়ার পরিবারও সরকারের উচ্চপর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। একটি মহল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদার পরিবারের যোগাযোগে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কৌশলগত কারণে এসব নিয়ে কোনো পক্ষই মুখ খুলতে নারাজ।

জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির পরও বসে নেই খালেদার পরিবার। সমঝোতার যে সূত্রে তার প্যারোলে মুক্তি হয়েছিলো, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিতে সরকারের সেই সূত্রে সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। এরই মধ্যে একবার বৈঠকও হয়েছে দুপক্ষের। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই করোনার অজুহাতে তারা দেশের কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করাননি।

সূত্র জানায়, সরাসরি রাজনীতি থেকে অবসরের কথা না বললেও খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে সরকারের পক্ষ থেকে ২টি শর্তের কথা জানানো হয়েছে। প্রথমত: লন্ডনে গিয়েও চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে পারবেন না। গুলশানে যেভাবে বাস করছেন লন্ডনে ঠিক তেমনি থাকবেন। দ্বিতীয়ত : বিদেশিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ থেকে বিরত থাকবেন। লন্ডনে থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দেয়া ও সভা-সমাবেশে যোগদান থেকে বিরত থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে খালেদার পরিবার চায় শর্ত মেনেই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবেন তিনি। অন্যদিকে শর্ত ছাড়াই লন্ডন যেতে চান খালেদা।

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, জামিনের পর তিনি এখনো পর্যন্ত কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি। তাই এ ব্যাপারে সরকার কঠোর হবে না। তার বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার এখনো তেমন উন্নতি হয়নি। চলাফেরাও করতে পারছেন না। মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন তো করতেই হবে। তবে কখন করব সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

দুটি দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত খালেদা জিয়া ২৫ মাস জেল খাটার পর গত ২৫ মার্চ জামিন পান। আইন আদালত নয় প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছায় তাকে জামিন দেয়া হয়। জামিন পাওয়ার পর বিএনপি প্রধান গত সাড়ে চার মাস তার গুলশানের বাসভবন থেকে একাবারের জন্যও বের হননি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া তো দূরের কথা দলের কোনো বিষয়ে কথাও বলেননি। দুই ঈদে বিএনপির স্থায়ী কমিটির কিছু নেতা তার সঙ্গে সৌজন্য করলেও তারা জোর গলায় বলেছেন, রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে কথা হয়নি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে আসছেন। গত ১ আগস্ট ঈদুল আজহার দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদেশে না যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে শর্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার বিদেশে চিকিৎসাই এখন বেশি প্রয়োজন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন, সেই সুযোগের অপেক্ষায় আছি।

আগস্ট ২০, ২০২০ at ১০:৪৮:৩৭ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিকে/তআ

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.

%d bloggers like this: