করোনা মহামারীর কারণে সিনেমার কাজ বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। তারকারা ঘরে বসেই সময় কাটিয়েছেন। অনেকেই শ্যুটিংয়ে ফিরলেও এখনো কাজে ফেরেননি পূর্ণিমা। ঘরে বসেই সময় কাটাচ্ছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
পূর্ণিমা বলেন, ‘ ঘরে বসেই সময় কাটছে। করোনার কারণে মানুষের জীবন যে এ রকম বদলে যাবে, দীর্ঘদিন এভাবে ঘরে থাকতে হবে ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে পার হবে সবার জীবন, সেটা কেউই ভাবেনি। তবে যাই হোক না কেন, সব ধরনের হতাশা, বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠে নরমাল লাইফ লিড করার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে কখনই এতদিন ধরে একটানা বাসায় থাকা হয়নি। এই প্রথম আমি কাজ ছাড়া পাঁচ মাস ছিলাম। শুয়ে-বসে কাটিয়েছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা।’সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে করোনার প্রভাব নিয়ে পূর্ণিমা বলেন, ‘এখন তো অনলাইনে অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে। নেটফ্লিক্স, আমাজনসহ অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে যেগুলোতে আমাদের সিনেমা, নাটক দেখানো যেতে পারে। এই করোনা পরিস্থিতে কেউই হলে যাবে না। ফলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তবে বছরখানেকের ভেতরে যদি করোনা চলে যায় তাহলে হয়তো আবার দর্শক ফিরে আসবে। আবার আগের মতোই মানুষ সিনেমা হলে ছবি দেখতে যাবে।’
এখন পূর্ণিমার হাতে রয়েছে দুটি সিনেমা। একটি ‘গাঙচিল’, অন্যটি ‘জ্যাম’। দুটি সিনেমাই পরিচালনা করছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল। আগামী সপ্তাহ থেকে ‘গাঙচিল’ সিনেমার শ্যুটিং শুরু করার কথা থাকলেও পূর্ণিমা অংশ নিতে পারছেন না। পূর্ণিমা বলেন, ‘আমার মেয়েকে প্রতিদিন অনলাইনের ক্লাসগুলোতে অংশ নিতে হয়। তখন আমাকেও ওর পাশে থাকতে হয়। কারণ ও অনেক ছোট। সে জন্য এই মুহূর্তে শ্যুটিংয়ে অংশ নিতে পারছি না। সবাইকে অনুরোধ করেছি শ্যুটিং পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। কারণ, জীবনের চেয়ে কাজ বড় হতে পারে না। শুধু শুধু ঝুঁকি নেব না। পরিচালক ও কলাকুশলীরা আমার অনুরোধ রেখেছেন।’
প্রায় পাঁচ বছরের বিরতি শেষে ২০১৮ সালে এ দুই সিনেমার কাজ শুরু করেন পূর্ণিমা। দীর্ঘ বিরতি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে পাঁচ বছর নতুন চলচ্চিত্রে অভিনয় করিনি আমি, সেই পাঁচ বছর কিন্তু একটার পর একটা চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য প্রস্তাব এসেছিল আমার কাছে। কিন্তু গল্প কিংবা চরিত্র কোনোটাই আমার হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি। তাই কাজ করা হয়ে ওঠেনি। যে দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করছি এখন, দুটি ছবিতেই আমার বন্ধু ফেরদৌস আছে। আমি বুঝেশুনেই এ দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করছি। নেয়ামুলের নির্দেশনায় এর আগে নাটকে অভিনয় করলেও তার সঙ্গে এ দুটিই প্রথম চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে। একসঙ্গে দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করা আমার জন্য এই সময়ে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, একটি চরিত্রের সঙ্গে আরেকটির কোনো মিল নেই।’পূর্ণিমার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে আসা অনেক তারকা ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছেন, কিন্তু পূর্ণিমা এখনো টিকে রয়েছেন অভিনয়ের মাঠে। তিনি বলেন, ‘আসলে আমার সঙ্গে যারা কাজ শুরু করেছিলেন তাদের অনেকেই এখন কাজ করছেন না। আমি কাজ করছি সেটা আসলে সবার ভালোবাসা ও চাওয়াতেই হচ্ছে। আমি এজন্য ভক্তদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির চলমান দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা এমনিতেই ভালো নয়। এই সময়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়। আগে আমাদের চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবতে হবে। সিনেমা কীভাবে চালানো যায়, সেসব নিয়ে ভাবতে হবে। আমি অনুরোধ করব, এসব দলাদলি বাদ দিয়ে সিনেমার সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে ভাবা উচিত।’
আগস্ট ২৮, ২০২০ at ১৯:৪৭:১৩ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বাআ/এনআফটি
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.