৩১ আগস্ট, সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও বীরউত্তম মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্তের মরদেহ।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ।
সি আর দত্তের মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমাগারে রাখা হবে বলে এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পরিষদ। এরপর আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় তার মরদেহ বনানী ডিওএইচএসের বাসায় নেয়া হবে। সেখান থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হবে।মন্দির চত্বর থেকে বেলা ১১টায় মরদেহ রাজারবাগ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আগে সি আর দত্তের মরদেহে সামরিক সম্মাননা জ্ঞাপনের জন্য গানস্যালুট প্রদান করা হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং হবিগঞ্জে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় গত ২৫ আগস্ট, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার (নিউইয়র্ক সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টা) দিকে মারা যান চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীর উত্তম। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
এর আগের বৃহস্পতিবার নিজ বাসভবনের বাথরুমে পড়ে যান সি আর দত্ত। এতে তার পা ভেঙে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ আগস্ট তার মৃত্যু হয়।পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে হলেও আসামের শিলংয়ে ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন চিত্ত রঞ্জন দত্ত।
১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার কিছুদিন পর ‘সেকেন্ড লেফটেনেন্ট’ পদে কমিশন পান তিনি। সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে চিত্তরঞ্জন দত্ত লড়েন ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে। এ যুদ্ধে আসালংয়ে একটা কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে পুরস্কৃত করে পাকিস্তান সরকার।পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ যে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত হয়, তার মধ্যে ৪নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন সি আর দত্ত।
সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই শায়স্তাগঞ্জ রেল লাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে গঠিত এই ৪নং সেক্টরে বিশেষ অবদানের জন্য সি আর দত্ত বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীর উত্তম সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাথে যুক্ত থাকা ছাড়াও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
আগস্ট ৩১, ২০২০ at ১০:৫৮:৩৩ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বাআ/এনআফটি
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.