ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) নিউইয়র্কে বক্তৃতা দেয়ার মঞ্চে সালমান রুশদির ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
‘দি স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসটি লেখার কারণে বছরের পর বছর ধরে হত্যার হুমকি পেয়ে আসছেন এই লেখক। অনেক মুসলিম বইটিতে তাদের ধর্মের অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন। খবর এপি, এনডিটিভি ও বিবিসির।
চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন বুকার পুরস্কার জয়ী এই লেখক। এই সময়ে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এক লোককে মঞ্চের দিকে দৌঁড়ে উঠতে দেখেছেন তারা। এরপর রুশদিকে ‘হয় ঘুষি মেরেছে অথবা ছুরিকাঘাত করেছে’।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, রুশদির ওপর হামলা হলে উপস্থিত লোকেরা মঞ্চের দিকে ছুটে যায়। তবে সালমান রুশদির কী অবস্থা তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে টুইটারে সর্বপ্রতম প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারী ব্রিটিশ লেখক উইলিয়াম ডেলরিম্পন বলেন, সাহিত্য, বাকস্বাধীনতা ও সর্বোপরি লেখকদের জন্য অশুভ দিন আজ। সালমান, তোমার সঙ্গে যা হলো, তা অন্যায়। তুমি এত দ্রুত যেও না। প্রার্থণা করি, দ্রুত সেরে ওঠো।
২০১২ সালে ইরানের একটি স্বায়ত্তশাসিত ধর্মীয় সংস্থা তার মাথার দাম ৩০ লাখ ডলার ঘোষণা করে।
এদিকে, নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানকার পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বিতর্কিত এই লেখককে হেলিকপ্টারে করে ওই এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশন। এছাড়া, যিনি রুশদির সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন, এ হামলাকারী তাকেও আঘাত করেছেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী মাথায় সামান্য আঘাত পেয়েছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক সালমান রুশদি ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ১৯৮৮ সালে বুকার পুরস্কার জয়ী ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাস লেখার কারণে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচিত হন। এরপর থেকে লোকচক্ষুর অন্তরালে বসবাস করতে থাকেন। তবে জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেছেন।
- ১৯৭৫ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘গ্রিমুস’ প্রকাশিত হয়।
- ১৯৭৫ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘গ্রিমুস’ প্রকাশিত হয়।
- ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’, ১৯৮৩ সালে ‘শেম’।
- ১৯৯০ সালে ‘হারুন অ্যান্ড দ্য সি অব দ্য স্টোরিজ।
প্রভৃতি উপন্যাস একে একে প্রকাশিত হয়। ২০১২ সালে ইরানের একটি স্বায়ত্তশাসিত ধর্মীয় সংস্থা তার মাথার দাম ৩০ লাখ ডলার ঘোষণা করে। এ হামলার সঙ্গে ইরানের যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার কারণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি সালমান রুশদীকে হত্যা করার জন্য ফতোয়া জারি করেছিলেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.