যশোরের একটি স্কুলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ট্যাব বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলাার সদর উপজেলার নতুন খয়েরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবম ও দশম শ্রেণির ৬ শিক্ষার্থীর প্রাপ্য ৬টি ট্যাবের মধ্যে ৩টি ট্যাব মেধাবীদের না দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
আর খাতা-কলমে ঠিক রাখতে নিয়ম ভেঙ্গে সহকারী প্রধান শিক্ষকের দুই ছেলে ও তার এ অনিয়মে সহযোগি এক শিক্ষক প্রতিনিধির ভাগনিকে (বোনের মেয়ে) ওই ট্যাব দেয়া হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন, ট্যাব বঞ্চিত মেধাবী ৩ শিক্ষার্থী ও ক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষক সৈয়দ এহসানুর রহমানের রোষানল থেকে রক্ষা প্রেতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, মেধাবীদের মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ট্যাব নবম ও দশম শ্রেণির ১ থেকে ৩ রোল নম্বরধারী ৩জন করে শিক্ষার্থীকে দেয়ার কথা। সম্প্রতি নতুন খয়েরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থীকে অনেকটা লুকোচুরি করে ওই ট্যাব দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দেখা গেছে, নবম শ্রেণির দুই রোল নম্বরধারী সুরাইয়া ইয়াসমিন ও দশম শ্রেণির ১ রোল নম্বরধারী মঈন উদ্দিন ফাইম ও ২ রোল নম্বরধারী রাজ দেবনাথ ওই ট্যাব পেয়েছেন। এছাড়া নবম শ্রেণির আরো দুই জনকে এই ট্যাব দেয়া হয়েছে।
তারা হলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানের দুই ছেলে ১০ রোল নম্বরধারী এস রাগীব আবরার ও ১১ রোল নম্বরধারী এসএম কাইফ আবরার। এ শ্রেণিতে ঘোষণা অনুযায়ী পাওয়ার কথা, ১ রোল নম্বরধারী শেখ নওরীন স্বচ্ছ ও ৩ রোল নম্বরধারী আল-রাফি-উর রহমাননের। অন্যদিকে, দশম শ্রেণির ট্যাব প্রাপ্ত অপর শিক্ষার্থ হলেন, স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি প্রধান শিক্ষকের আস্থাভাজন রাসেলা খাতুনের ভাগনি ৪ রোল নম্বরধারী তাসনীম তাবাচ্ছুম। যা পাওয়ার কথা ৩ রোল নম্বরধারী রায়হান হোসেনের।
ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আরো জানিয়েছেন, এ অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এরই মধ্যে দুই শিক্ষক ও ৩ শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষক ও তার সহযোগিদের বিরাগ ভাজন হয়েছেন। তাদেরকে নানাভাগে দেখে নেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব নিয়মানুযায়ী দুই শ্রেণির ১ থেকে ৩ রোল নম্বরধারীরাই পাক।
নবম শ্রেণির ১ রোল নম্বরধারী নওরীন স্বচ্ছর মা শাহিনুর আক্তার পলি জানান, ‘আমার মেয়ে ১ রোল নম্বর হওয়া সত্তে¡ও তাকে ট্যাব না দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১০ ও ১১ রোল নম্বরধারী দুই ছেলেকে ট্যাব দেয়া হয়েছে। এ খবর পেয়ে আমার মে কান্নাকাটি করার পর আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি।
তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। তবে ট্যাব এখনও দেয়নি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ এহসানুর রহমান বলেন, ‘নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের ছেলে এস রাকিব আবরার ও এসএম কাইফ আবরার খুবই মেধাবী। তাই তাদেরকে ট্যাব দেয়া হয়েছে। আর দশম শ্রেণির ৩ রোল নম্বরধারী রায়হান হোসেনের চেয়ে ৪ রোল নম্বরধারী তাসনীম তাবাচ্ছুম স্কুলের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েছিল।
কিন্তু ভূল করে তাবাচ্ছুমের স্থলে রায়হানকে ৩ রোল নম্বর করা হয়েছিল। তাই রায়হানকে না দিয়ে তাবাচ্ছুমকে দেয়া হয়েছে’। তবে নবম শ্রেীনর ১ রোল নম্বরধারীকে ট্যাব দেয়ার জন্য তাকে খুঁজছি বলে জানান প্রধান শিক্ষক। এদিকে, ট্যাব বিতরণে এ অনিয়ম ও লুকোচুরি নিয়ে ক্ষুব্ধ স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে স্কুলে হৈচৈ শুরু হয়েছে।
মার্চ ৩০, ২০২৩ at ২০:৪৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আক/সুরা
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.