দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ আট পৌরসভার নির্বাচনে আইনি কোনো বাধা নেই। মতামত চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের পাঠানো নথিটি দীর্ঘ এক মাস আইন মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকার পর রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সেটা অনুমোদন করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ার নথিটি অনুমোদন করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে নথিটি সলিসিটর উইংয়ে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আজ সোমবার নথি স্থানীয় সরকার বিভাগে পৌঁছবে। এরপর মন্ত্রী তাজুল ইসলামের অনুমোদন নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, এ সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হতে পারে। এ খবর জানিয়েছেন দৈনিক ইত্তেফাক।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু আটটি পৌরসভায় মামলা মোকদ্দমার অজুহাতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুরোধ না পাওয়ায় তারা নির্বাচন করতে পারছিল না। পক্ষান্তরে সরকারি কর্মকর্তা কিংবা অনির্বাচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে এসব পৌরসভা পরিচালনা করা হচ্ছে; যা স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনের পরিপন্থি।
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী কোনো নির্বাচিত মেয়রের মেয়াদ পাঁচ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই পৌরসভা বিলুপ্ত হবে। সেখানে সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের জন্য সরকার মনোনীত প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে। তবে একজন প্রশাসক কোনোক্রমেই একাধিক্রমে ১৮০ দিনের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। একজন প্রশাসকের ১৮০ দিনের মেয়াদ শেষ হলে সেখানে অন্য আরেক জনকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে মামলা মোকদ্দমা যা-ই থাকুক, তা নির্বাচনের পক্ষে বাধা হবে না।
দেশের আটটি পৌরসভার ক্ষেত্রে মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে বছরের পর বছর নির্বাচন না দিয়ে প্রশাসক দিয়ে চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিলল্লাহ ফারুকী জানান, ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে আটটিতে নির্বাচন করা যায়নি। এগুলো নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন করা যাবে কি না, সে বিষয়ে মতামত দেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুরোধপত্র ছাড়া নির্বাচন কমিশন নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না।
যেসব পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করে পরিচালনা করা হচ্ছে সেগুলো হলো : যশোর জেলার বেনাপোল, নরসিংদী জেলার শিবপুর, চট্টগ্রাম জেলার দোহাজারী, পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া, হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ, চাঁদপুর জেলার ছেংগারচর ও কুমিল্লা জেলার দ্বেবীদার। এসব পৌরসভার প্রায় সবগুলোতেই একাধিকবার প্রশাসক বদল করা হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.