Take a fresh look at your lifestyle.

পত্নীতলা ম্যাটসে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে জোড়াতালি দিয়ে

অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

প্রচুর জনবল সংকট নিয়ে চলছে নওগাঁর পত্নীতলা মেডিকেল এ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস)। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসাজ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ল্যাবে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষা সরঞ্জাম। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠার চার বছরে অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চলছে পতœীতলা ম্যাটসের শিক্ষা কার্যক্রম।

পতœীতলা ম্যাটসের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২২ কোটি ৯৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর পতœীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার পুঁইয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো নির্মাণ করে।

প্রতিষ্ঠানটিতে তিনতলা বিশিষ্ট একটি এ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের জন্য দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট দুটি কোয়ার্টার ভবনের নির্মাণকাজ শেষে ২০২১ সালে অবকাঠামোটি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষকে বুঝে দেয়। মোট ৫২ আসন বিশিষ্ট চার বছর মেয়াদী কোর্সে ওই বছরেই প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠাটিতে তিনটি ব্যাচে মোট ১৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটিতে একজন অধ্যক্ষসহ মোট ১৩ জন শিক্ষকের অনুমোদিত পদ রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নওগাঁ সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. এম এ হাই পত্নীতলা ম্যাটসের অধ্যক্ষ হিসেবে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ১২ জন শিক্ষক পদের (ছয়জন লেকচারার ও ছয়জন টিউটর) কোনো পদেই এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে ৭ জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসাজ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ল্যাবে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষা সরঞ্জাম।

গত বুধবার দুপুর ১টার দিকে পতœীতলা ম্যাটস ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের এ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে যেতেই ভবনটির মূল ফটকে তালা দিচ্ছেন দুজন লোক। তাঁদের একজন ফেরদৌস খান। তিনি পতœীতলা ম্যাটসে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি জানালেন, এই প্রতিষ্ঠানে তিনিই একমাত্র নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি। অধ্যক্ষসহ বাকি যাঁরা এখানে আপাতত দ্বায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা সবাই অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব হিসেবে পতœীতলা ম্যাটসে অতিথি শিক্ষক হিসেবে পাঠদান কিংবা প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পkত্নীতলা হেলথ কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও নজিপুর সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক হিসেবে এখানে এসে মাঝে মাঝে ক্লাস নিয়ে যান। সাধারণত দুপুরের আগেই ক্লাস শেষ হয়ে যায়। আজকেও সকালে দুইটা ক্লাস ছিলো। আর কোনো ক্লাস না থাকায় আমরা চলে যাচ্ছি।

প্রতিষ্ঠানটির ছেলেদের আবাসিক হলে গিয়ে কথা হলো কয়েজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকটের কারণে তাঁদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম হচ্ছে না। এছাড়া এখানে ল্যাবে পর্যাপ্ত ল্যাব ফ্যাসিলিটি নেই। ফলে চিকিৎসাজ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের জন্য তাঁদের ব্যবহারিক শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁরা তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরমভাবে চিন্তিত।

দ্বিতীয় শিক্ষার্থী রায়হান কবির ও ফয়সাল দেওয়ান বলেন, ম্যাটসে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক না থাকায় তাঁদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। প্রথম বর্ষে কোনো কোনো বিষয়ে সারা বছরে মাত্র ১০-১২টি করে ক্লাস হয়েছে। এছাড়া এখানে ল্যাব ফ্যাসিলিটি নেই বললেই চলে। ল্যাবে অ্যানাটমি, প্যাথলজি ও ফার্মাকোলজি বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য অ্যানাটমি কঙ্কাল, মাইক্রোস্কোপ, সেন্টিফিউজ যন্ত্র, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা রি-এজেন্টসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নাই। এছাড়া তাঁদের প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার জন্য কোনো লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাব নেই। এর ফলে চিকিৎসাজ্ঞানের অনেক বিষয়ই তাঁদের অজানা থেকে যাচ্ছে।

পতœীতলা ম্যাটসের অধ্যক্ষ এম এ হাই বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে বলতে গেলে কোনো জনবলই নেই। ১২ জন শিক্ষক সহ প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৪০ জন লোকবল থাকার কথা। কিন্তু এখানে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত মাত্র একজন কর্মচারী রয়েছেন। তাও তিনি গাজীপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তাঁকে প্রেষণে অফিস সহায়ক হিসেবে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন। আমি নিজেও অধ্যক্ষ হিসেবে এখানে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছি।

যাঁরা এখানে পাঠদান করাচ্ছেন তাঁরা সবাই অন পেইড (টাকার বিনিময়ে) অতিথি শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এখানে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য দুটি হল রয়েছে। হলগুলোতে দুজন হল সুপার থাকার কথা। সেই দুটি পদও ফাঁকা রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তাকর্মীসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোও ফাঁকা রয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেক সমস্যার মধ্যে যেতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অন্তত ১০-১২ বার চিঠি দিয়ে লোকবল নিয়োগ ও ল্যাবের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা হয়নি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.

%d bloggers like this: