যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও হলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসাথে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীবের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে দুপুরে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন এনএফটি বিভাগের ভুক্তভুগী শিক্ষার্থী মোঃ ইসমাইল হোসেন।
ঘটনার ভয়াবহতা বিবেচনায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন ইতিমধ্যে শহীদ মসিয়ূর রহমানের হলের প্রভোস্টকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের এবং আক্রান্ত শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শহীদ মসিয়ূর রহমান হল কর্তৃপক্ষও সহকারী প্রভোস্ট তরুন সেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বডিকে একটি তদন্ত কমিটি করে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে রবিবার রাতেই শহীদ মসিয়ূর রহমান হল কর্তৃপক্ষ মো. ইসমাইল হোসেনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমানকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে। এদিকে, গতকাল রোববার রাতে ঘটনার শোনার সঙ্গে সঙ্গে যবিপ্রবির হল প্রশাসন আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় উদ্ধারের পর যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে। মধ্যরাতে যবিপ্রবি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, প্রভোস্ট, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর শারীরিক খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য হাসপাতালে ছুটে যান। বর্তমানে মো. ইসমাইল হোসেনের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসমাইলের সহপাঠীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী দুপুর ২টার দিকে ইসমাইলকে ডেকে শহীদ মসিয়ূূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। এরপর দুপুর ২টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। এক সহপাঠী বিষয়টি জানার পর আরও কয়েকজনকে জানান। পরে কৌশলে ইসমাইলকে উদ্ধার করেন সহপাঠীরা। সেইসঙ্গে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় অচেতন অবস্থায় ইসমাইলকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সহপাঠীদের দাবি, পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে কেন, কী কারণে চাঁদা দাবি করা হয়েছে, তা তারা জানাতে পারেননি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.