যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ধোপাদী গ্রামে সবকিছু লুটে নিয়ে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিয়েছে প্রতারক স্বামী। এ ঘটনায় স্ত্রী স্বামীর বাড়িতে যেয়ে কোলের সন্তানকে নিয়ে অনশন ধর্মঘট পালন করেছে। ঘটনাটি গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্ত্রী এ অনশন ধর্মঘট পালন করেন।
এসময় প্রতারক স্বামী পলাতক রয়েছে। জানা গেছে, ৩বছর আগে উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ইয়াকুব আলী শেখের ছেলে মোঃ বুলবুল ইসলাম শেখ (৩৩) এর সাথে একই গ্রামের মুছা গাজীর মেয়ে জামিলা বেগম(৩১) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। এসময় জামিলার কোল জুড়ে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সংসার বেশ ভালোই যাচ্ছিল। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর প্রতারক স্বামী জামিলার কাছ থেকে যৌতুক নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এর আগেও বুলবুল ইসলাম শেখের ২টি বউ ছিল।
তাদেরকেও তাড়ানো হয়েছেবলে জানা যায়। তাদের ঘরেও কন্যা সন্তান রয়েছে। এসময় ভুক্তভোগী জামিলা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, বুলবুল আমার স্বামী। আমার আগেও তার আরো ২ জন স্ত্রী ছিলো। আমি তা জানতাম না। আজ প্রায় দুই বছর আগে আমাকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে। এবং বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকাসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল এনে আমার এই সংসার সাজিয়েছি।
বুলবুলের সাথে সংসার করে আমার একটি কন্যা সন্তান মাবিয়া ১বছর বয়স এই মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো। সকাল ধরে আমাকে আমার ঘরে তালা মেরে বের করে দিয়ে স্বামী বুলবুল কোথায় চলে গেছে । শশুর দেবর সকলে আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমি আমার অধিকারে এখানে রয়েছি।
আর থাকবো তার জন্য যদি আমি মরে যায় যাবো। সরেজমিনে, জামিলা ও তার ১ বছরের কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির ঊঠানে দাড়িয়ে আছেন। বুলবুলের বাড়ির সব ঘরে তালা ঝুলানো রয়েছে। এলাকার মানুষেরা এই বিষয়টি দেখতে ভিড় করছেন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই বুলবুল ইসলাম একজন বিয়ে পাগল প্রতারক এর আগেও সে দুইটি বিয়ে করে ঐ স্ত্রীদের কাছ থেকেও অর্থ আত্মসাৎ করে তাদেরকে ও তালাক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে।
এলাকার একাধিক ব্যক্তিরা বুলবুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার একাধিক বিষয় অভিযোগ তুলে ধরেন। ভুক্তভোগী জামিলা বেগম স্বামী বুলবুল এর বাড়িতে অনশনে রয়েছেন। স্থানীয়দের মধ্যে কয়েকজন জানান, বুলবুলের প্রথম স্ত্রীর পিতাকে ধোপাদী নতুন বাজার সংলগ্ন মারপিট করে আহত করেন।
তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না বলে তারা জানান। এ বিষয়ে প্রতারক বুলবুল এর পিতা ইয়াকুব আলী শেখ বলেন, যৌতুক বাবদ ২ লাখ টাকা নেওয়া হয়নি ৭৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র বউ মা জামিলা বেগম সব এনেছে। তিনি স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে তাকে না রাখলে আমি কি করবো আমার কিছু করার নেই।
বুলবুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এবিষয়ে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) একেএম শামীম হাসান বলেন, এ বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এপ্রিল ০৫, ২০২৩ at ১৬:৫১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জাহোহৃ/সুরা
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.