যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে হলে আটকে রেখে মারধর ও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠে গত রবিবার। যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নং রুমে প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে ইসমাইল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে রড, জিআই পাইপ ও বেল্ট দিয়ে মারধর করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী শোয়েব ও সালমান।
জানা গেছে, এ ঘটনায় পরদিন সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ডা. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সালমান এম রহমান ও শোয়েব আলীকে আসামি করা হয়। মামলা করার আগেই অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে যবিপ্রবি প্রশাসন।
গত রবিবার (২রা এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে আবাসিক হলের কক্ষে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। কিন্তু এ ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসমাইল হোসেনকে তাঁর বিভাগ থেকে ডেকে আবাসিক হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে চার ঘণ্টা ধরে ছাত্রলীগের দুই কর্মী শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমান নির্যাতন করেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অচেতন অবস্থায় ইসমাইলকে উদ্ধার করে রাত ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খান মাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলার এজাহারভুক্ত দুজন আসামি পলাতক আছেন। তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁরা তাঁদের অবস্থান দ্রুত পরিবর্তন করছেন। আশা করছি, দ্রুতই আমরা তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারব।
এ দিকে নির্যাতনের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যপ্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন তিন দিনেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। শ্রেণিকক্ষেও ফিরতে পারছেন না।ইসমাইল হোসেন জানান, ‘হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ফিরেছি। তবে সুস্থ হতে পারিনি। পুরোপুরি শয্যাশায়ী অবস্থায় আছি।
মাথা ও পিঠে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। ক্লাস চললেও আমি ক্লাসে ফিরতে পারছি না। অথচ নির্যাতনকারীদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হলো না। এটা ভেবে আরও কষ্ট পাচ্ছি। নির্যাতনকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এপ্রিল ০৬, ২০২৩ at ০৯:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ফহা/সুরা
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.